অটিজম কি?
অটিজম এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার (এএসডি- অটিজমের পরিধির অন্তর্ভূক্ত সমস্যাসমূহ) উভয়ই মস্তিষ্কের বিকাশ জনিত এক শ্রেণীর জটিল সমস্যা। এই বিকাশ জনিত সমস্যাগুলোর বৈশিষ্ট বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন: স্বাভাবিক সামাজিক সম্পর্কে অসুবিধা, কথার মাধ্যমে বা ইশারায় ভাব প্রকাশে অসুবিধা এবং একই আচরণের পুনরাবৃত্তি করার প্রবণতা। অটিস্টিক ডিসওর্ডার, রেট সিন্ড্রোম, শৈশবে ক্রমহ্রাসমান বুদ্ধিমত্তা, পারভেসিভ ডেভলপমেন্টাল ডিসওর্ডার এবং এ্যাসপারজার সিনড্রম বলতে উপরোক্ত বৈশিষ্টগুলিকেই বুঝায়। বয়স উপযোগী বোধগম্যতা/বুদ্ধিমত্তা, অঙ্গ সঞ্চালনে সমস্যা, মনোযোগের অভাব এবং শারীরিক সমস্যা যেমন- হজম ও নিদ্রাজনিত সমস্যা প্রভৃতিও অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার এর অন্তর্ভূক্ত। তবে এ এস ডি (অটিজম স্পেক্টাম ডিসঅর্ডার) আছে এমন ব্যক্তিদের কারো কারো দেখে মনে রাখা, গান, শিল্পকলা-ছবিআঁকা এবং গণিত বিষয়ে অত্যন্ত প্রখরতা থাকে।
মস্তিষ্কের প্রাথমিক বিকাশকালীন সময়ে অটিজমের সূচনা হতে পারে। তবে অটিজমের বেশীরভাগ লক্ষণ সমূহ সাধারণত ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সেই শিশুদের মাঝে সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। কিছু শিশু দ্বিতীয় বছর পেরুনোর আগপর্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে উঠে, কিন্তু এরপর তারা তাদের স্বাভাবিক বিকাশগত দক্ষতা গুলো হারিয়ে অটিজমের শিকার হয়- এই প্রবণতাকে রিগ্রেশন বলা হয়। শুরুতেই অটিজম নির্ণয় করা গেলে ও অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি আচরণগত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হলে শিশুর সাম্ভব্য উন্নতি পাওয়া যায়। অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে পরিবার ও সমাজের অন্যান্যরা গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান ভূমিকা পালন করতে পারে।
অটিজমের বিস্তার কোন পর্যায়ে রয়েছে?
ইউ.এস. সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন এর জরিপ অনুযায়ী প্রতি ৮৮জন আমেরিকান শিশুর মধ্যে ১ জনের অটিজম আছে এবং গত ৪০ বছরে প্রতিবছর ১০গুণ হারে এর বৃদ্ধি ঘটেছে। গবেষনায় দেখা গেছে (উন্নত রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া ও গণ সচেতনতার মাধ্যমে অটিজম বৃদ্ধির হার –বিষয়ক তথ্য সকলের নজরে এসেছে। গবেষণায় জানা গেছে যে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অটিজম হয়ে থাকে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশী। আমরিকায় ৫৪ জন ছেলের মধ্যে ১জন এবং ২৫২জন মেয়ের মধ্যে ১জনের অটিজম হয়ে থাকে। তুলনা করে দেখা গেছে, সম্মিলিত ভাবে যত শিশুর ডায়াবেটিস, এইডস, ক্যান্সার, সেরিব্রাল পালসি, সিস্টিক ফিব্রোসিস, মাসকুলার ডিসট্রফি এবং ডাউন সিন্ড্রম হয়ে থাকে তার চেয়ে অটিজমের এই সংখ্যা বেশী।
প্রতি বছর আমরিকায় ২ মিলিয়ন লোকের মাঝে এএসডি(অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) দেখা যায় এবং সারা বিশ্বে ১০ মিলিয়নের মত লোকের অটিজম হয়ে থাকে। তাছাড়া আমেরিকার সরকারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই অটিজমের বিস্তার বার্ষিক ১০ থেকে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধি নির্ভরযোগ্য কারণ সম্পর্কে কোন প্রতিষ্ঠিত / জানা যায়নি তবে উন্নত রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া এবং পরিবেশগত প্রভাব এর জন্য দায়ী বলে বিবেচনা হয়ে থাকে।
কেন অটিজম হয়?
কিছুদিন আগেও এ সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা ছিল না। কিন্তু গবেষনার ফলে বর্তমানে এ বিষয়ে কিছু উত্তর পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমতঃ আমরা জানতে পেরেছি॥যে, কোন একক কারণে যেমন অটিজম হয় না তেমনি বিভিন্ন ধরণের অটিজম রয়েছে। গত ৫ বছরের গবেষণায়, গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা কিছু সংখ্যক বিরল জিনগত(জীবকোষ) পরিবর্তন বা মিউটেশন করেছেন যার সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা ১০০এর উপর অটিজমের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী জিন নির্ণয় করেছেন। শতকরা ১৫ ভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তির অটিজমের জন্য নির্দিষ্ট জেনেটিক (বংশগত বৈশিষ্ট) প্রভাবের এর যোগাযোগ রয়েছে। বস্তুত, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের প্রাথমিক গঠন কালীন সময়ে জটিল এবং পরিবর্তনশীল মিশ্র জেনেটিক ঝুঁকি এবং পরিবেশগত উপাদানের প্রভাবে অটিজম সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় বলা যায় অটিজমপ্রবণ বংশগত কারণ, কতিপয় বংশগতি নিরপেক্ষ এবং পরিবেশগত প্রভাবে- শিশুর মাঝে অটিজম হবার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। শিশুর জন্ম পূর্ববর্তী এবং জন্মকালীন কোন বিশেষ ঘটনা পরিবেশগত ঝুঁকির অন্তর্ভূক্ত- যেমন: গর্ভধারণের সময় পিতা-মাতার অধিক বয়স, গর্ভকালীন অবস্থায় মায়ের কোন অসুস্থ্যতা, জন্মলাভের স্বাভাবিক সময়ের আনেক আগেই শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়া অথবা জন্মকালীণ সময়ে অস্বাভাবিক কম ওজন, জন্মকালীণ জটিলতা-যেমন জন্মের সময় শিশুর মস্তেষ্কে কম অক্সিজেন সঞ্চালিত হওয়া প্রভৃতি। মায়েদের গর্ভকালীণ সময়ে বায়ুদূষণ অথবা কীটনাশকের পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা শিশুর অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এটা মনে রাখা জরুরী যে এইসব উপাদান এককভাবে অটিজম সৃষ্টি করে না বরং বংশগত উপাদান সমূহের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে অধিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে। একটি ছোট পরিসরের কিন্তু ক্রমবিকাশমান গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুদের ময়েরা তাদের গর্ভধারণের পূর্বের এবং পরবর্তী মাস গুলিতে ভিটামিন(যাতে ফলিক এ্যাসিড রয়েছে) সেবন করেছেন সেই সব শিশুদের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম। ক্রমবর্ধমানভাবে গবেষকরা অটিজমের উপর রোগপ্রতিরোধ প্রক্রিয়ার ভূমিকা নিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
“অন দা স্পেকট্রাম(পরিসরের মধ্যে) বলতে কি বুঝায়”?
প্রতিটি অটিজম থাকা ব্যক্তির মধ্যে পৃথক বৈশিষ্ট্য বিরাজ করে। তবে এএসডি(অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে কারো কারো দেখে মনে রাখা, সঙ্গীত, ছবি আঁকা এবং গণিত বিষয়ে চরম প্রখরতা থাকে । অটিজম স্পেকট্রামে(পরিসরের) অন্তর্ভূক্ত অনেকের মধ্যেই দৃষ্টিশক্তিগত, সঙ্গীত বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অসাধারণ উৎকর্ষ পরিলক্ষিত হয়। এদের মধ্যে শতকরা ৪০ শতাংশের বুদ্ধিগত ক্ষমতা (আই.কিউ এর মাত্রা ৭০ এর নীচে) থাকে এবং অনেকে স্বাভাবিক বুদ্ধিমান আবার কেউ কেউ অতি মেধাবী। অটিজম স্পেকট্রামের অন্তর্ভূক্ত অনেক ব্যক্তি তাদের অসাধারণ বৈশিষ্টের জন্য গর্ব অনুভব করে কিন্তু বাকিরা অতিমাত্রার অক্ষমতার জন্য পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে। প্রায় ২৫% শতাংশ অটিজম আছে এমন ব্যক্তিরা কথা বলতে পারেনা কিন্তু অন্যান্য উপায়ে তারা ভাব বিনিময়ের কৌশল শিখতে পারে।
অটিজমের জন্য কি টিকাকে (ভ্যাকসিন) দায়ী করা যায়?
অটিজমের ক্রমবর্ধমান বি¯তৃতির পেছনে প্রতিষেধক টিকার কোন ভূমিকা আছে কি না তা নির্ধারণের জন্য অনেক গবেষণা করা হয়েছে। এসব গবেষণায় হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এম এম আর) ভাইরাসের টিকা এবং যেসব টিকায় থিমেরোসাল সংরক্ষক(প্রিজারভেটিভ) রয়েছে সেগুলির প্রতি অধিক মনোযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এসব গবেষণায় টিকার সঙ্গে অটিজমের কোন প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। অভিভাবকেরা যাতে সন্তানদের টিকা প্রদান করেন সে জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি কারণ, এর ফলে শিশুরা মারাত্মক ব্যধি সমূহ থেকে রক্ষা পাবে। প্রতিষেধক টিকা এবং বিদ্যমান বংশগত বা অন্যান্য অসুস্থ্যতার সম্মিলিত প্রভাবে শিশুর মধ্যে অটিজম হবার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা থেকেই যায়।
বিশেষ করে যে সব বাবা-মার একজন সন্তান বা আত্মীয় ইতোমধ্যে অটিজমের শিকার হয়েছে তাদের মনে টিকার নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা থাকতেই পারে। পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের মধ্যে এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে আশঙ্কা রয়েই যায় তাই তাদের উচিৎ তাদের শিশুর মঙ্গলের জন্য শিশুরোগচিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা। কোন শিশুকে সুস্থ্য রাখার একটি অন্যতম কৌশল হল এমন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ বা আস্থার সম্পর্ক তৈরী করা যিনি শিশুটিকে বা তার পরিবারকে জানেন।
আমি কিভাবে বুঝবো আমার সন্তানের অটিজম আছে কি না?
যদিও শিশুর বয়স ১৮ থেকে ২৪ মাস না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে অটিজম নির্ণয় করা যায় না, তবুও গবেষণায় ৮ থেকে ১২ মাস বয়সের শিশুর মধ্যে অনেক সময় অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়। অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখতে হবে ৯ মাস বয়সের মধ্যে শিশুটি আধোবুলি, হাসি বা নানা রকম মুখোভঙ্গী করে কি না। ১২ মাস বয়সের মধ্যে আধোবুলি / (ব্যবলিং) হাত-পা দিয়ে শরীরের কিছু ইঙ্গিত(যেমন আঙ্গুল দিয়ে কিছু দেখান) করার প্রবণতা আছে কি না অথবা যে কোন বয়সে আধোবুলি কথা বলার বা ইঙ্গিত করার সামর্থ এবং স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে কি না।
আমার শিশুটির কোন সমস্যা হয়েছে এমন সন্দেহ হলে আমি কি করবো?
বিলম্ব না করেই তখনই একজন চিকিৎসক বা অটিজম বিষয়ক প্রাক-প্রাথমিক সেবা দানকারী সংস্থার কারো কাছে শিশুটিকে নিয়ে যান। যাতে শিশুটির সমস্যা চিহ্নিত করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম নির্ণয় করে ব্যবস্থা নিতে পারলে অটিজমের ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়াগুলি অনেক সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়।
আমার শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা কিভাবে পাবো?
প্রথমিক ভাবে অটিজম নির্ণয়ের পাশাপাশি একটি যোগ্য এবং জ্ঞান সম্পন্ন চিকিৎসক দলের সহায়তা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ অটিজম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, মনোবিজ্ঞানী, মানসিকরোগ চিকিৎসক এবং শিক্ষক খুজে বের করা যারা শিশুর পরিবর্তনশীল চাহিদাগুলি সঠিকভাবে পূরণ করতে সক্ষম হবে।
আমার অটিজম আছে এমন সন্দেহ দেখা দিলে কি করবো?
অ্যাসপারজার সিন্ড্রম অথবা অন্যকোন উচ্চ ক্রিয়াশীল এএসডি (অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আক্রাšত অনেক মানুষ রয়েছেন যারা তাদের শৈশবে প্রতিবন্ধকতা নির্ণয় প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কেউ কেউ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে পেশাগত বা সামাজিক সম্পর্ক জনিত সমস্যায় পতিত হয়ে চিকিৎসকের স্মরণাপণœ হয়। চিকিৎসকের কাছে একজন অটিজম সংক্রাšঅ্যাসপারজার সিন্ড্রম অথবা অন্যকোন উচ্চ ক্রিয়াশীল এএসডি (অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আক্রাšত বিশেষজ্ঞের সন্ধান চাওয়া জরুরী। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত যে সব ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্কদের অটিজম নির্ণয়ের যোগ্যতা রাখেন তারা হলেন লাইসেন্সধারী ক্লিনিকাল মনোবিজ্ঞানী, নিউরোলজিস্ট এবং মনোরোগ চিকিৎসক। কিছু পেশাজীবি নার্স, সমাজকর্মী এবং মাস্টার্স পর্যায়ের মনোবিজ্ঞানীরও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অটিজম নির্ণয়ের যোগ্যতা আছে।
আমি অটিজম রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া কিভাবে মোকাবেলা করবো?
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অটিজম নির্ণীত হওয়া তাদের সারা জীবনের বিড়ম্বনার একটি যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা হিসেবে স্ব¯িত বয়ে আনতে পারে। অভিভাবগণ যখন প্রথম আবিষ্কার করেন তাদের সন্তানের মাঝে স্বাভাবিক বিকাশগত বৈকল্য রয়েছে তখন থেকে পরবর্তী কয়েক মাস তাদের মধ্যে ভাবাবেগ ও বিভ্রাšিত বিরাজ করতে পারে এবং পরিস্থিতিকে বিরুপ মনে হতে পারে। তবে সন্তানের এরূপ অবস্থার জন্য অভিভাবকদের উচিৎ নয় নিজেদের দায়ী করা।
এর পরের ধাপ হল, অটিজম সম্পর্কে নিজেদের শিক্ষিত করে তোলা। জ্ঞানই শক্তি এবং আপনি অটিজম সম্পর্কে যত জানবেন ততই কার্যকরভাবে আপনার সন্তানকে সহোযোগীতা করতে পারবেন। সেইসাথে অটিজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকে কিছুটা বিশ্রাম নেয়াও অভিভাবকদের জন্য জরুরী যখন এর দ্বারা সৃষ্ট জটিলতায় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আপনি যদি অনুভব করেন সন্তানের প্রতিনন্ধকতা বা অক্ষমতা থাকার বিষয়টি আপনাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে তাহলে আপনি একজন কাউন্সিলার বা থেরাপিস্ট এর সাহায্য নিতে পারেন। আপনি এককভাবে এ সমস্যার মোকাবেলা করতে পারবেন এমনটা আশা করা যায় না।
আমার সন্তান কি স্কুলে যেতে পারবে?
নিশ্চই পারবে। বে এটা তার জন্মগত অধিকার। অ্যামেরিকান সরকার ‘ইন্ডিভিজুয়ালস উইথ ডিজেবিলিটিস এ্যাক্ট ১৯৯০’ অনুযায়ী তারা সেখানকার শিশুদের বিনা বেতনে উপযুক্ত শিক্ষা লাভের ব্যবস্থা করে থাকে। এই শিক্ষা গতানুগতিক অথবা বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি- এই উভয় প্রকারেরই হয়ে থাকে।
অটিজম এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার (এএসডি- অটিজমের পরিধির অন্তর্ভূক্ত সমস্যাসমূহ) উভয়ই মস্তিষ্কের বিকাশ জনিত এক শ্রেণীর জটিল সমস্যা। এই বিকাশ জনিত সমস্যাগুলোর বৈশিষ্ট বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন: স্বাভাবিক সামাজিক সম্পর্কে অসুবিধা, কথার মাধ্যমে বা ইশারায় ভাব প্রকাশে অসুবিধা এবং একই আচরণের পুনরাবৃত্তি করার প্রবণতা। অটিস্টিক ডিসওর্ডার, রেট সিন্ড্রোম, শৈশবে ক্রমহ্রাসমান বুদ্ধিমত্তা, পারভেসিভ ডেভলপমেন্টাল ডিসওর্ডার এবং এ্যাসপারজার সিনড্রম বলতে উপরোক্ত বৈশিষ্টগুলিকেই বুঝায়। বয়স উপযোগী বোধগম্যতা/বুদ্ধিমত্তা, অঙ্গ সঞ্চালনে সমস্যা, মনোযোগের অভাব এবং শারীরিক সমস্যা যেমন- হজম ও নিদ্রাজনিত সমস্যা প্রভৃতিও অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার এর অন্তর্ভূক্ত। তবে এ এস ডি (অটিজম স্পেক্টাম ডিসঅর্ডার) আছে এমন ব্যক্তিদের কারো কারো দেখে মনে রাখা, গান, শিল্পকলা-ছবিআঁকা এবং গণিত বিষয়ে অত্যন্ত প্রখরতা থাকে।
মস্তিষ্কের প্রাথমিক বিকাশকালীন সময়ে অটিজমের সূচনা হতে পারে। তবে অটিজমের বেশীরভাগ লক্ষণ সমূহ সাধারণত ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সেই শিশুদের মাঝে সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। কিছু শিশু দ্বিতীয় বছর পেরুনোর আগপর্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে উঠে, কিন্তু এরপর তারা তাদের স্বাভাবিক বিকাশগত দক্ষতা গুলো হারিয়ে অটিজমের শিকার হয়- এই প্রবণতাকে রিগ্রেশন বলা হয়। শুরুতেই অটিজম নির্ণয় করা গেলে ও অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি আচরণগত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হলে শিশুর সাম্ভব্য উন্নতি পাওয়া যায়। অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে পরিবার ও সমাজের অন্যান্যরা গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান ভূমিকা পালন করতে পারে।
অটিজমের বিস্তার কোন পর্যায়ে রয়েছে?
ইউ.এস. সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন এর জরিপ অনুযায়ী প্রতি ৮৮জন আমেরিকান শিশুর মধ্যে ১ জনের অটিজম আছে এবং গত ৪০ বছরে প্রতিবছর ১০গুণ হারে এর বৃদ্ধি ঘটেছে। গবেষনায় দেখা গেছে (উন্নত রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া ও গণ সচেতনতার মাধ্যমে অটিজম বৃদ্ধির হার –বিষয়ক তথ্য সকলের নজরে এসেছে। গবেষণায় জানা গেছে যে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অটিজম হয়ে থাকে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশী। আমরিকায় ৫৪ জন ছেলের মধ্যে ১জন এবং ২৫২জন মেয়ের মধ্যে ১জনের অটিজম হয়ে থাকে। তুলনা করে দেখা গেছে, সম্মিলিত ভাবে যত শিশুর ডায়াবেটিস, এইডস, ক্যান্সার, সেরিব্রাল পালসি, সিস্টিক ফিব্রোসিস, মাসকুলার ডিসট্রফি এবং ডাউন সিন্ড্রম হয়ে থাকে তার চেয়ে অটিজমের এই সংখ্যা বেশী।
প্রতি বছর আমরিকায় ২ মিলিয়ন লোকের মাঝে এএসডি(অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) দেখা যায় এবং সারা বিশ্বে ১০ মিলিয়নের মত লোকের অটিজম হয়ে থাকে। তাছাড়া আমেরিকার সরকারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই অটিজমের বিস্তার বার্ষিক ১০ থেকে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধি নির্ভরযোগ্য কারণ সম্পর্কে কোন প্রতিষ্ঠিত / জানা যায়নি তবে উন্নত রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া এবং পরিবেশগত প্রভাব এর জন্য দায়ী বলে বিবেচনা হয়ে থাকে।
কেন অটিজম হয়?
কিছুদিন আগেও এ সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা ছিল না। কিন্তু গবেষনার ফলে বর্তমানে এ বিষয়ে কিছু উত্তর পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমতঃ আমরা জানতে পেরেছি॥যে, কোন একক কারণে যেমন অটিজম হয় না তেমনি বিভিন্ন ধরণের অটিজম রয়েছে। গত ৫ বছরের গবেষণায়, গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা কিছু সংখ্যক বিরল জিনগত(জীবকোষ) পরিবর্তন বা মিউটেশন করেছেন যার সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা ১০০এর উপর অটিজমের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী জিন নির্ণয় করেছেন। শতকরা ১৫ ভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তির অটিজমের জন্য নির্দিষ্ট জেনেটিক (বংশগত বৈশিষ্ট) প্রভাবের এর যোগাযোগ রয়েছে। বস্তুত, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের প্রাথমিক গঠন কালীন সময়ে জটিল এবং পরিবর্তনশীল মিশ্র জেনেটিক ঝুঁকি এবং পরিবেশগত উপাদানের প্রভাবে অটিজম সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় বলা যায় অটিজমপ্রবণ বংশগত কারণ, কতিপয় বংশগতি নিরপেক্ষ এবং পরিবেশগত প্রভাবে- শিশুর মাঝে অটিজম হবার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। শিশুর জন্ম পূর্ববর্তী এবং জন্মকালীন কোন বিশেষ ঘটনা পরিবেশগত ঝুঁকির অন্তর্ভূক্ত- যেমন: গর্ভধারণের সময় পিতা-মাতার অধিক বয়স, গর্ভকালীন অবস্থায় মায়ের কোন অসুস্থ্যতা, জন্মলাভের স্বাভাবিক সময়ের আনেক আগেই শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়া অথবা জন্মকালীণ সময়ে অস্বাভাবিক কম ওজন, জন্মকালীণ জটিলতা-যেমন জন্মের সময় শিশুর মস্তেষ্কে কম অক্সিজেন সঞ্চালিত হওয়া প্রভৃতি। মায়েদের গর্ভকালীণ সময়ে বায়ুদূষণ অথবা কীটনাশকের পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা শিশুর অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এটা মনে রাখা জরুরী যে এইসব উপাদান এককভাবে অটিজম সৃষ্টি করে না বরং বংশগত উপাদান সমূহের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে অধিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে। একটি ছোট পরিসরের কিন্তু ক্রমবিকাশমান গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুদের ময়েরা তাদের গর্ভধারণের পূর্বের এবং পরবর্তী মাস গুলিতে ভিটামিন(যাতে ফলিক এ্যাসিড রয়েছে) সেবন করেছেন সেই সব শিশুদের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম। ক্রমবর্ধমানভাবে গবেষকরা অটিজমের উপর রোগপ্রতিরোধ প্রক্রিয়ার ভূমিকা নিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
“অন দা স্পেকট্রাম(পরিসরের মধ্যে) বলতে কি বুঝায়”?
প্রতিটি অটিজম থাকা ব্যক্তির মধ্যে পৃথক বৈশিষ্ট্য বিরাজ করে। তবে এএসডি(অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে কারো কারো দেখে মনে রাখা, সঙ্গীত, ছবি আঁকা এবং গণিত বিষয়ে চরম প্রখরতা থাকে । অটিজম স্পেকট্রামে(পরিসরের) অন্তর্ভূক্ত অনেকের মধ্যেই দৃষ্টিশক্তিগত, সঙ্গীত বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অসাধারণ উৎকর্ষ পরিলক্ষিত হয়। এদের মধ্যে শতকরা ৪০ শতাংশের বুদ্ধিগত ক্ষমতা (আই.কিউ এর মাত্রা ৭০ এর নীচে) থাকে এবং অনেকে স্বাভাবিক বুদ্ধিমান আবার কেউ কেউ অতি মেধাবী। অটিজম স্পেকট্রামের অন্তর্ভূক্ত অনেক ব্যক্তি তাদের অসাধারণ বৈশিষ্টের জন্য গর্ব অনুভব করে কিন্তু বাকিরা অতিমাত্রার অক্ষমতার জন্য পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে। প্রায় ২৫% শতাংশ অটিজম আছে এমন ব্যক্তিরা কথা বলতে পারেনা কিন্তু অন্যান্য উপায়ে তারা ভাব বিনিময়ের কৌশল শিখতে পারে।
অটিজমের জন্য কি টিকাকে (ভ্যাকসিন) দায়ী করা যায়?
অটিজমের ক্রমবর্ধমান বি¯তৃতির পেছনে প্রতিষেধক টিকার কোন ভূমিকা আছে কি না তা নির্ধারণের জন্য অনেক গবেষণা করা হয়েছে। এসব গবেষণায় হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এম এম আর) ভাইরাসের টিকা এবং যেসব টিকায় থিমেরোসাল সংরক্ষক(প্রিজারভেটিভ) রয়েছে সেগুলির প্রতি অধিক মনোযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এসব গবেষণায় টিকার সঙ্গে অটিজমের কোন প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। অভিভাবকেরা যাতে সন্তানদের টিকা প্রদান করেন সে জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি কারণ, এর ফলে শিশুরা মারাত্মক ব্যধি সমূহ থেকে রক্ষা পাবে। প্রতিষেধক টিকা এবং বিদ্যমান বংশগত বা অন্যান্য অসুস্থ্যতার সম্মিলিত প্রভাবে শিশুর মধ্যে অটিজম হবার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা থেকেই যায়।
বিশেষ করে যে সব বাবা-মার একজন সন্তান বা আত্মীয় ইতোমধ্যে অটিজমের শিকার হয়েছে তাদের মনে টিকার নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা থাকতেই পারে। পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের মধ্যে এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে আশঙ্কা রয়েই যায় তাই তাদের উচিৎ তাদের শিশুর মঙ্গলের জন্য শিশুরোগচিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা। কোন শিশুকে সুস্থ্য রাখার একটি অন্যতম কৌশল হল এমন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ বা আস্থার সম্পর্ক তৈরী করা যিনি শিশুটিকে বা তার পরিবারকে জানেন।
আমি কিভাবে বুঝবো আমার সন্তানের অটিজম আছে কি না?
যদিও শিশুর বয়স ১৮ থেকে ২৪ মাস না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে অটিজম নির্ণয় করা যায় না, তবুও গবেষণায় ৮ থেকে ১২ মাস বয়সের শিশুর মধ্যে অনেক সময় অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়। অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখতে হবে ৯ মাস বয়সের মধ্যে শিশুটি আধোবুলি, হাসি বা নানা রকম মুখোভঙ্গী করে কি না। ১২ মাস বয়সের মধ্যে আধোবুলি / (ব্যবলিং) হাত-পা দিয়ে শরীরের কিছু ইঙ্গিত(যেমন আঙ্গুল দিয়ে কিছু দেখান) করার প্রবণতা আছে কি না অথবা যে কোন বয়সে আধোবুলি কথা বলার বা ইঙ্গিত করার সামর্থ এবং স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে কি না।
আমার শিশুটির কোন সমস্যা হয়েছে এমন সন্দেহ হলে আমি কি করবো?
বিলম্ব না করেই তখনই একজন চিকিৎসক বা অটিজম বিষয়ক প্রাক-প্রাথমিক সেবা দানকারী সংস্থার কারো কাছে শিশুটিকে নিয়ে যান। যাতে শিশুটির সমস্যা চিহ্নিত করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম নির্ণয় করে ব্যবস্থা নিতে পারলে অটিজমের ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়াগুলি অনেক সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়।
আমার শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা কিভাবে পাবো?
প্রথমিক ভাবে অটিজম নির্ণয়ের পাশাপাশি একটি যোগ্য এবং জ্ঞান সম্পন্ন চিকিৎসক দলের সহায়তা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ অটিজম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, মনোবিজ্ঞানী, মানসিকরোগ চিকিৎসক এবং শিক্ষক খুজে বের করা যারা শিশুর পরিবর্তনশীল চাহিদাগুলি সঠিকভাবে পূরণ করতে সক্ষম হবে।
আমার অটিজম আছে এমন সন্দেহ দেখা দিলে কি করবো?
অ্যাসপারজার সিন্ড্রম অথবা অন্যকোন উচ্চ ক্রিয়াশীল এএসডি (অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আক্রাšত অনেক মানুষ রয়েছেন যারা তাদের শৈশবে প্রতিবন্ধকতা নির্ণয় প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কেউ কেউ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে পেশাগত বা সামাজিক সম্পর্ক জনিত সমস্যায় পতিত হয়ে চিকিৎসকের স্মরণাপণœ হয়। চিকিৎসকের কাছে একজন অটিজম সংক্রাšঅ্যাসপারজার সিন্ড্রম অথবা অন্যকোন উচ্চ ক্রিয়াশীল এএসডি (অটিজম স্পেকট্রাম ডিসওর্ডার) আক্রাšত বিশেষজ্ঞের সন্ধান চাওয়া জরুরী। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত যে সব ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্কদের অটিজম নির্ণয়ের যোগ্যতা রাখেন তারা হলেন লাইসেন্সধারী ক্লিনিকাল মনোবিজ্ঞানী, নিউরোলজিস্ট এবং মনোরোগ চিকিৎসক। কিছু পেশাজীবি নার্স, সমাজকর্মী এবং মাস্টার্স পর্যায়ের মনোবিজ্ঞানীরও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অটিজম নির্ণয়ের যোগ্যতা আছে।
আমি অটিজম রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া কিভাবে মোকাবেলা করবো?
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অটিজম নির্ণীত হওয়া তাদের সারা জীবনের বিড়ম্বনার একটি যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা হিসেবে স্ব¯িত বয়ে আনতে পারে। অভিভাবগণ যখন প্রথম আবিষ্কার করেন তাদের সন্তানের মাঝে স্বাভাবিক বিকাশগত বৈকল্য রয়েছে তখন থেকে পরবর্তী কয়েক মাস তাদের মধ্যে ভাবাবেগ ও বিভ্রাšিত বিরাজ করতে পারে এবং পরিস্থিতিকে বিরুপ মনে হতে পারে। তবে সন্তানের এরূপ অবস্থার জন্য অভিভাবকদের উচিৎ নয় নিজেদের দায়ী করা।
এর পরের ধাপ হল, অটিজম সম্পর্কে নিজেদের শিক্ষিত করে তোলা। জ্ঞানই শক্তি এবং আপনি অটিজম সম্পর্কে যত জানবেন ততই কার্যকরভাবে আপনার সন্তানকে সহোযোগীতা করতে পারবেন। সেইসাথে অটিজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকে কিছুটা বিশ্রাম নেয়াও অভিভাবকদের জন্য জরুরী যখন এর দ্বারা সৃষ্ট জটিলতায় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আপনি যদি অনুভব করেন সন্তানের প্রতিনন্ধকতা বা অক্ষমতা থাকার বিষয়টি আপনাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে তাহলে আপনি একজন কাউন্সিলার বা থেরাপিস্ট এর সাহায্য নিতে পারেন। আপনি এককভাবে এ সমস্যার মোকাবেলা করতে পারবেন এমনটা আশা করা যায় না।
আমার সন্তান কি স্কুলে যেতে পারবে?
নিশ্চই পারবে। বে এটা তার জন্মগত অধিকার। অ্যামেরিকান সরকার ‘ইন্ডিভিজুয়ালস উইথ ডিজেবিলিটিস এ্যাক্ট ১৯৯০’ অনুযায়ী তারা সেখানকার শিশুদের বিনা বেতনে উপযুক্ত শিক্ষা লাভের ব্যবস্থা করে থাকে। এই শিক্ষা গতানুগতিক অথবা বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি- এই উভয় প্রকারেরই হয়ে থাকে।
Source: Training Class.
No comments:
Post a Comment